পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এনাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে নতুন করে সংযোজন হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কংকাল। প্রফেসর ড. মোঃ সাইদুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, উদ্যমী তরুণ গবেষকদের দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমে প্রস্তুত হয় বাঘের কংকাল। বন্যপ্রাণীর শারীরিক গঠন ও গবেষণার ক্ষেত্রে বাঘের কংকালটি উক্ত অনুষদের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের আরেকটি নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
বাঘটি ২০২২ সালে রংপুর চিড়িয়াখানায় বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালকের অনুমতিক্রমে একই বছরের অক্টোবর মাসে মৃতদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিদের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। গবেষকদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও কর্মকান্ড অবলম্বনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কংকাল প্রস্তুত হয়।
পবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে বাঘের কংকালটি শিক্ষা ও গবেষণার জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
এসময় পবিপ্রবির উপাচার্য বাঘের এই কংকাল সন্নিবেশন একটি দুর্লভ কাজ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি আরও বলেন এধরনের গবেষণামূলক ব্যতিক্রমধর্মী কাজে কংকাল তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট ছাত্র ও শিক্ষক দলটির স্বতঃস্ফূর্ত অবদান বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে। এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি ল্যাব সমৃদ্ধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতীতের ন্যায় সর্বোচ্চ সহায়তা করবে বলে আশ্বস্ত করেন।
প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, আমি খুবই আনন্দিত, একটি তারুণ্যদীপ্ত উদ্যোমী দল নিয়ে বাঘ এবং জলহস্তীর কংকালের কাজটি শেষ করতে পেরেছি। এই টিমের প্রতিভাবান তরুণরা সুনামের সাথে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে পোষাপ্রাণীর কংকাল তৈরীতে অবদান রেখে সাড়া ফেলেছে। ভবিষ্যতে নতুন কংকাল সংযোজন করে ল্যাবকে সমৃদ্ধ করার এই ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো।
এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ তফাজ্জল হোসেন বলেন, বাঘের কংকালটি জ্ঞান অর্জনের অমূল্য ভান্ডার হয়ে থাকবে। এভাবেই পবিপ্রবি শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে গিয়ে দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান তৈরী করবে।
কংকাল সন্নিবেশ দলে উক্ত অনুষদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বর্ষের তরুণ উদ্যমী শিক্ষার্থী নিরলস পরিশ্রম করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম সদস্য ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডাঃ মোঃ জাফরুল হাসান শুভ বলেন, এনাটমি ল্যাবরেটরি ও কংকাল গঠনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম বর্ষ থেকেই একটা ভালোবাসা কাজ করতো।কেননা, যেকোনো ধরনের প্রাণীর পাশাপাশি দুর্লভ বন্য প্রাণী ও তাদের কংকাল ভেটেরিনারি মেডিসিনের গবেষণা ও শিক্ষার অন্যতম কারিগরী উপকরণ হতে পারে।
কংকাল প্রস্তুতকরণ দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডাঃ মোঃ তারিকুর রহমান তারেক বলেন, এনাটমি ল্যাব সমৃদ্ধ করার জন্য দুর্লভ বন্যপ্রাণী সংগ্রহ ও কংকাল সংযোজন কর্মকান্ডে বরাবরের মত অংশ নিয়ে নিজেদের একটা পরিতৃপ্তি কাজ করে।পবিপ্রবির এনাটমি ল্যাব হবে বন্য প্রাণির কংকাল গবেষণার অন্যতম তীর্থভূমি, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।