গোপালগঞ্জের প্রভাব খাটিয়ে কেন্দ্রিয় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে গত সাত বছর ধরে কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। জমি দিতে রাজি না হওয়ায় ডিবি পরিচয়ে মাইক্রোবাসে তুলে ঢাকায় নিয়ে প্রাণনাশের হুমকী দিয়ে অবৈধ ভাবে ভুয়া দলিল নেয়া হয় জমি দাতাদের কাছ থেকে। এরপর জমির মালিক তো দুরের কথা জমিদাতারাও এলাকায় ঠিক ভাবে থাকতে পারেন নি। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন সেচ্ছাসেবক লীগের প্রভাবশালী নেতা এম এ খায়ের মোল্লা।
পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে রবিবার (১৩ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক মোঃ জসিম উদ্দিন রানা।
জসিম উদ্দিন রানা জানান, তার বাবার ইচ্ছা পুরনের জন্য ২০১৪ সালে কুয়াকাটার লতাচাপলী মৌজায় এসএ ১২৬২/১ খতিয়ান ১৫ এর সাড়ে ১৫ শতাংশ জমি একতলা ভবন সহ বায়নাসূত্রে ক্রয় করেন কুয়াকাটা নিবাসী মোঃ সায়েদুর রহমান, মনিরা বেগম এবং আলী হোসেন খানের কাছ থেকে।
এরপর টাকার স্বল্পতার কারণে মোঃ জসিমউদ্দিন ২০১৭ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত ধীরে ধীরে চারতলা পর্যন্ত কাজ করায় জমিদাতাদের মাধ্যমেই।
জমিদাতা সায়েদুর রহমান জানান, রাস্তার পাশে ভাল পজিশন হওয়ায় ওই ভবনের উপর নজর পড়ে গোপালগঞ্জ নিবাসী সেচ্ছাসেবক লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম এ খায়ের মোল্লার। প্রথমে জমিদিতে রাজী না হওয়ায় এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রæয়ারী রাতে ডিবিপরিচয়ে একটি মাইক্রোবাসে ওই বিল্ডিংয়ের জমিদাতা তিনজনকে কুয়াকাটা থেকে ঢাকায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে একটি বাসায় আটকিয়ে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে তাদের তিনজনের কাছ থেকে জোড় করে স্বাক্ষর রেখে দিয়ে কমিশন এর মাধ্যমে একটি ভুয়া দলিল বের করে। এরপর জসিমের করা বিল্ডিংয়ে রোজভেলি সাইনবোর্ড টানিয়ে হোটেল ব্যবসা শুরু করেন। একই অভিযোগ করেন অন্য জমিদাতা মনিরা বেগম ও আলী হোসেন।
একদিকে বাড়ী গোপালগঞ্জ অন্যদিকে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হওয়ায় গোটা কুয়াকাটায় ছিল তার একক আধিপত্ব। পটুয়াখালী জেলা ও কুয়াকাটা শাখার নেতৃবৃন্দদের সাথে নিয়েই মূলতঃখায়ের মোল্লা বিভিন্ন মানুষের জমি দখল করে। ভয়ে এখনও কেউ মূখ খুলতে সাহস পায় না। এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের।
শুধু হোটেল দখল করেই ক্ষ্যান্ত হননি। ঢাকার এবং জেলার নেতৃবৃন্দদের নিয়ে চালাতো নানা ধরনের বৈঠক। চলতো রাতভর মদ আর নারীদের নিয়ে আমোদ ফূর্তি। যা স্বীকার করেছেন খায়েরের তৎকালীন ম্যানেজার রেজাউল করিম।
জসিম উদ্দিন রানা জানান, দীর্ঘ সাতবছর পর গত সপ্তাহে আদালত থেকে আইনি সমাধানের পর রবিবার পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে এসব বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। কারণ কিছুদিন আগে ঢাকায় জসিমকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের নামে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে ফেইসবুকে ছেড়েছে খায়ের মোল্লা। যা ছিল সব কাল্পনিক।
জসিম আরো জানান, সব কিছু ঠিক থাকার পরেও খায়ের মোল্লার অব্যাহত হুমকীতে তার জমি সহ ‘হোটেল রোজভেলি’ বুজে নিতে পারছেন না এটি সবচেয়ে বড় আক্ষেপ।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে এম এ খায়ের মোল্লা জানান,আমি কাউকে অপহরণ করিনি। জমিদাতারা স্ব ইচ্ছায় আমাকে জমি লিখে দিয়েছে। এখন আগে যদি কারো সাথে জমিদাতারা বায়না চুক্তি করে থাকে সেটাতো আমার বিষয় না।