সৌদিপ্রবাসী খোকন হাওলাদার। মুঠোফোনে ভিডিও কলে কথা বলছিলেন দুই যমজ ছেলে আবদুল করিম ও আবদুল রহিমের সঙ্গে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্তানদের ভিডিও কলে রেখে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন খোকন হাওলাদার। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে।
মৃত খোকন হাওলাদারের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকার সবাই হতবিহ্বল।
এলাকারবাসী সূত্রে জানা যায়, উপার্জনের জন্য খোকন হাওলাদার সাত থেকে আট বছর ধরে সৌদিতে আছেন। স্ত্রী নূপুর বেগম ও তার যমজ দুই সন্তান আবদুল করিম ও আবদুল রহিম এলাকায় থাকে। দুই ভাই এবার মির্জাগঞ্জ উপজেলার রহমান ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করে। এখন দুই ভাই বরিশাল বিএম কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে। সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য নূপুর বেগম বরিশালের আমতলার মোড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।
খোকন হাওলাদার কিছুদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। চলতি মাসের ১৪ তারিখ তিনি সৌদিতে কর্মস্থলে ফিরে যান। গতকাল দুপুরে খোকন হাওলাদার মুঠোফোনে ভিডিও কলে কথা বলছিলেন ছেলেদের সঙ্গে। এ সময় স্ত্রী নূপুর বেগম পাশেই ছিলেন। ছেলেদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার একপর্যায়ে খোকন হাওলাদার একটি কাপড় দিয়ে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
আবদুল করিম বলে, বাবার সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আমরা দুই ভাই পাশাপাশি ছিলাম। বাবা আমাদের বিভিন্ন উপদেশমূলক কথা বলেছেন। আমরা বড় হয়ে কী হতে চাই, তাও জানতে চেয়েছেন। সবশেষে আমাদের দুই ভাইকে মুঠোফোনের মাধ্যমে চুমু দিলেন। ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করলেন। আমরা কিছুই করতে পারলাম না।
নূপুর বেগম বলেন, ভিডিও কলে কথা বলার সময় আমিও পাশে ছিলাম। আমার সঙ্গে তার কোনো ঝামেলা ছিল না। সকালেও তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। স্বামীর লাশ দেশে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানাই।