কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ঈদে মিলাদুন্নবী জলসে মিছিলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মীর আরিফ মিলন (৫২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১০-১২টি দোকানপাট ও ঘর ভাঙচুর এবং এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার ছয়সূতি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মিলন উপজেলার ছয়সূতি এলাকার মৃত মীর জাবু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুলিয়ারচরের ছয়সূতির প্রতাপনাথ বাজার এলাকার সৈয়দ আবু মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হামিদ (রহ.) মাজার আয়োজিত মাহফিলে মাওলানা গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরীর আগমনকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে সোমবার সকালে ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সুন্নি সমর্থক ও ইমাম-উলামাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইমাম-উলামা পরিষদের সমর্থক মীর আরিফ মিলন নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
কুলিয়ারচর ইমাম-উলামা পরিষদের নেতা মুফতি নাসির উদ্দিন রহমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আসাদুল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কয়েক দফা কথা বলেছি। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সিরাতুন্নবী মাহফিল বন্ধ রাখি। কিন্তু তাদের ঈদে মিলাদুন্নবীর জশনে জুলুসের মিছিল করতে দেয়। তারা আমাদের এক ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এবং অনেকে আহত হয়েছেন। তারা হুসাইয়নিয়া মাদ্রাসা ও কেন্দ্রীয় মসজিদে বেদাতিরা হামলা ও ভাঙচুর করেছে।’
সৈয়দ আবু মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হামিদ (রহ.) মাজারের খাদেম সৈয়দ ফয়জুল আলম বলেন, ‘গতকাল গিয়াস উদ্দিন তাহেরী হুজুরকে দিয়ে একটি মাহফিল করানোর কথা ছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা মাহফিল আয়োজন বন্ধ করে দেয়। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা মিছিল বের করি। তারা আমাদের মিছিলে হামলা চালিয়ে মাজারসহ ৮-১০টি ঘর, দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।’ খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান বলেন, ‘ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আহলে সুন্নতে জামায়েত একটি মিছিল ছিল। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে ইমাম-উলামা পরিষদের লোকদের সঙ্গে বিরোধ ছিল। তারই জের ধরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিছিল গেলে সে সময় মিছিল থেকে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী মসজিদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়লে দু’পক্ষের মধ্য সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ইমাম-উলামা পরিষদের এক সমর্থক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।’