কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে সারাদেশে সহিংসতার শুরু। এরপর গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। চরম অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়েছে দেশের বহু থানা। এসব থানার সংরক্ষিত কক্ষে রাখা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্ন এবং লিখিত উত্তরপত্রও (খাতা) হয়েছে ভস্মীভূত। এতে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, থানার মালখানায় রাখা প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক জায়গায় পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। সেগুলোর তথ্য সংগ্রহে তারা কাজ করছেন। এ পর্যন্ত ১৮টি থানায় রাখা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পুড়ে যাওয়ার তথ্য পেয়েছেন তারা। ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে ৬০টিরও বেশি থানায়। এসব থানায় রাখা প্রশ্নপত্র পুড়লেও তেমন সমস্যা নেই। তবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেওয়ার পর যে লিখিত উত্তরপত্র থানায় রাখা হয়েছিল, তা পুড়ে যাওয়ায় ফলাফল নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
ঢাকা বোর্ড সূত্র জানায়, গত ৩০ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর পর রুটিন মেনে মোট ৮ দিনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ১৫টি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৮টি বিষয়ের লিখিত উত্তরপত্র প্রথম কিস্তিতে স্ব স্ব বোর্ডে জমা পড়েছে। ১৪ ও ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত সাতটি বিষয়ের উত্তরপত্র স্ব স্ব কেন্দ্রের অধীনস্থ থানার মালখানায় সংরক্ষিত ছিল। সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় কিস্তিতে উত্তরপত্র বোর্ডে না পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে থানার মালখানায় এসব বিষয়ের উত্তরপত্র আটকা পড়ে।
এদিকে, মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ট্রেজারি বা থানায় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সে তথ্য পাঠাতে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে এ চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠি দেওয়ার পরদিন থেকেই আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য আসতে শুরু করে। বুধবার (৭ আগস্ট) চারটি বোর্ড থেকে ১৮টি থানায় থাকা উত্তরপত্র ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাঠানো হয়েছে। ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সংশ্লিষ্ট দুজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।